তাজা খবরমহানগররাজনীতিসম্পাদকের পছন্দ

নগরীতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের মানববন্ধন

খবর নারায়ণগঞ্জ.কম :
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের উপর দায়েকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, রোজিনাকে হেনস্তাকারী আমলা-পুলিশের শাস্তি, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও সচিবের অপসারণ, বাক-ব্যক্তি-সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণকারী কুখ্যাত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও উপনিবেশিক আমলের অফিসিয়াল সিক্রেসি এ্যাক্ট বাতিলের দাবিতে আজ ৩১ মে ২০২১ সোমবার বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে সোমবার বিকাল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম নেতা ও বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য কমরেড আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউসিস্ট পার্টি নাারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, গণসংহতি আন্দোলনের জেলার সমস্বকারী তরিকুল সুজন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দৈনিক প্রথম আলোর জেষ্ঠ্য সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির চিত্র তার অনুসন্ধানী রিপোর্টের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রী অফিস করেন না, ১৮০০ পদে নিয়োগে কোটি টাকার বাণিজ্য, জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম ১০ মাস বিমানবন্দরে পড়ে রয়েছে, ৯ সরকারি হাসপতালে কেনাকাটায় ৩৫০ কোটি টাকার দুর্নীতি ইত্যাদি তুলে ধরেছিলেন তখন দুর্নীতিবাজ আমলারা তাকে সংবাদ দেয়ার চক্রান্তমূলক কথা বলে গত ১৭ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের পিএস এর রুমে ডেকে নিয়ে ৬ ঘণ্টা ধরে হেনস্তা করে শারীরিক মানসিক নির্যাতন করে উপনিবেশিক আমলের ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেসি এ্যাক্টে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতা, বাক-ব্যক্তির স্বাধীনতায় সরকারি হস্তক্ষেপের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ এবং সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার পরিপন্থি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, রোজিনা ইসলাম দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী আমলার প্রতিহিংসার শিকার। রোজিনাকে বাতিল আইনে মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের সংবিধানের ৩য় ভাগের মৌলিক অধিকারের ২৬ ধারার সাথে অফিসিয়াল সিক্রেসি এ্যাক্ট সাংঘর্ষিক। ফলে যেদিন থেকে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়েছে সেদিন থেকেই সংবিধানের ৩য় ভাগের মৌলিক অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক সকল আইন বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু স্বাধীনতার অব্যবহতি পরেই ২য় সংশোধনীর মাধ্যমে কালাকানুন তৈরির রাস্তা খুলে দেয় তৎকালীন শেখ মুজিব সরকার। যার পথ বেয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ একের পর এক কালাকানুন জারী হতে থাকে। সর্বশেষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামক কুখ্যাত কালো আইন জারী করে নাগরিকের বাক ব্যক্তি সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছে। যার বলি হচ্ছে সাংবাদিক, শিক্ষক, লেখক, কাটুনিস্টসহ মুক্ত চিন্তার মানুষেরা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত না, ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর আমলা প্রশাসন পুলিশকে ব্যবহার করে দিনের ভোট রাতে করে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় বসেছে। ফলে আমলা-পুলিশের উপর নির্ভরশীল সরকার জনগণের যে কোন প্রতিবাদকে ভয় পায়। সামান্য কার্টুন, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনামূলক লেখা কোন কিছুই সহ্য করতে পারে না। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দমন করতেই সরকার কালা কানুন প্রণয়ন ও ব্যবহার করছে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, তাকে হেনস্তাকারী আমলা-পুলিশের শাস্তি, মন্ত্রী-সচিবের অপসারণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও অফিসিয়াল সিক্রেসি এ্যাক্ট বাতিল, বাক-ব্যক্তি-সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় সরকারি হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানান। একই সাথে বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী নির্যাতন-নিপীড়ন ও কালাকানুন বাতিলের দাবিতে সকল বাম গণতান্ত্রিক দল-ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

Related Articles

Back to top button