রূপগঞ্জে চলন্ত বাসে ফুটফুটে সন্তান প্রসব
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি: শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে ঈদের আগের দিন স্বামীর বাড়ি থেকে বাসে নাটোর থেকে রাজধানীর ডেমরায় বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন ফাতেমা খাতুন (২২) নামে সন্তানসম্ভবা এক নারী। পথে তার প্রসব ব্যথা ওঠে। কিন্তু বাসে কোনো নারী যাত্রী নেই। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তাকে পুরুষরা সহযোগিতার জন্য এগিয়ে যেতে পারছিলেন না। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ফুটফুটে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন ফাতেমা।
এদিকে, বাসের চালক নাইম মিয়া জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে দ্রুত এগিয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) নাজিমউদ্দীন মজুমদার। সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল এলাকায় বাস থামিয়ে অসুস্থ অবস্থায় সদ্য জন্ম নেয়া নবজাতক ও প্রসূতিকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তারা।
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) নাজিমউদ্দীন মজুমদার বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে ৯৯৯-এ খবর পেয়ে আমি, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) উত্তম কুমার ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যাই। ততোক্ষণে ওই মা বাসেই একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু চলন্তবাসে সন্তান প্রসব করায় মা-সন্তান উভয়ে ছিলেন অসুস্থ। দুজনকে পুলিশ ভ্যানে স্থানীয় ইউএস বাংলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করাই এবং তাদের পরিবারকে ফোনে খবর দেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফাতেমা খাতুন নাটোর জেলার আটঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহীন মিয়ার স্ত্রী। তার স্বামী দিনমজুর রাজধানীর সানারপাড় এলাকায় মালেক স্বর্ণকারের বাসায় ভাড়া থাকে। তাদের দুবছরের আরও একজন সন্তান রয়েছে।’
চিকিৎসাধীন ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অত্যাচারে নাটোর থেকে বাবার বাড়িতে ফেরার পথে বাসের মধ্যেই প্রসব ব্যথা ওঠে। এমন জরুরি সময় আমার পাশে কেউ ছিল না। এ সময় প্রাকৃতিক নিয়মে আমার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তবে আমি ও ছেলে অনেক অসুস্থ পড়ি। পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে না পাঠালে আমি কিংবা আমার সন্তান হয়তো মারা যেত। আমি পুলিশের আন্তরিক ভূমিকায় ধন্যবাদ জানাই।’