তাজা খবরথানার সংবাদশীর্ষ সংবাদসম্পাদকের পছন্দসিদ্ধিরগঞ্জ থানা
আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ীর দখল নিলেন ভিক্ষুক পরিবার
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :
সিদ্ধিরগঞ্জে প্রতারণা করে বসতবাড়ী লিখে নেওয়া প্রতারকের দায়ের করা প্রতারণা মামলায় জামিন পেয়েছেন ভিক্ষুক পরিবার। আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে বাড়ীর দখল নিয়েছেন পরিবারটি। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ অমানবিক আচরণ করায় লিখিত অভিযোগ করেছেন জেলা পুলিশ সুপারে কাছে।
জানা গেছে, মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল ছামাদের ছেলে সালাউদ্দিন ওরফে আব্দুর রহিম। হেঁটে হেঁটে বিক্রি করতেন জালমুড়ি। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পা ভেঙে হয়ে যান পঙ্গু। পরে শুরু করেন ভিক্ষা। স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন পৈতৃক সূত্রে পাওয়া এক কাঠা জমিতে নির্মিত টিনসেট বাড়ীতে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করার পর বাড়ীটি দখল করে নিয়েছিল “মিজমিজি বাতানপাড়া সমাজ কল্যাণ আদর্শ যুব সংগঠন” এর সভাপতি রাজু প্রধান।
জানা গেছে, প্রতারণার মামলায় আদালতের পরোয়ানার ভিত্তিতে গত ৪ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে পুলিশ ভিক্ষুক সালাউদ্দিন (৪৮) তার স্ত্রী রোকিয়া বেগম (৪২) ও ছেলে মেহেদী হাসানকে (২০) গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতে পাঠালে বিচারক তাদের জেলহাজতে পাঠান। পরে ৮ আগষ্ট আদালত সবাইকে জমিন দেন।
সালাউদ্দিন জানান, স্ত্রী রোকেয়ার সাথে বিরোধের জেরে ঘর ছেড়ে ছিলাম। তখন একই এলাকার বশীর উদ্দিন প্রধানের ছেলে “মিজমিজি বাতানপাড়া সমাজ কল্যাণ আদর্শ যুব সংগঠন” এর সভাপতি রাজু প্রধান আমাকে কৌশলে নিয়ে যায় বন্দর থানা এলাকায়। সেখানে একটি ঘরভাড়া করে দেন। মাঝে মাঝে সেখানে গিয়ে আমার বাড়ী ভিটা তার নামে লিখে দেওয়ার প্রলোভন দেখাত। আমি রাজি না হলে আমার কাছ থেকে জোর করে সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়। কিছুদিন পর গিয়ে বলে আমার ছেলে সুমনকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে তার কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা কর্জ্য নিয়েছি। হয় টাকা ফেরত দে নাহলে বাড়ী লিখে দেয়। তাতেও আমি রাজি না হলে গত ৯ জানুয়ারি আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে নিয়ে যায় সাবরেজিষ্ট্রার অফিসে। আমাকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে জোর করে দলিলে স্বাকর নেয়। আমি কিছু বললে মেরে ফেলবে বলে ভয় দেখায়। পরে জানতে পারি সে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে আমার বাড়ী-ভিটা সাফ কবলা দলিল করে নিয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি নিজ বাড়ীতে ফিরে এসে আদালতে দলিল বাতিলের মামলা করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজু লোকজন নিয়ে ৯ এপ্রিল আমাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করেন। ওই ঘটনায় রাজুর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করি। সে আমার বাড়ী-ভিটা দখল করতে আমি ও আমার স্ত্রী সন্তানকে আসামি করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রতারণার মামলা করে। আমি তা জানতে না পারায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেপ্তারের পর আমার আইনজীবী প্রকৃত ঘটনা আদালতে উপস্থাপন করলে বিচারক সবাইকে জামিন দিয়ে দেন।
এদিকে রাজু প্রধানের প্ররোচনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক নূর আলম ও আব্দুর রাজ্জাক ভিক্ষুক সালাউদ্দিন পরিবারকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের সাথে অমানবিক আচরণ করেন। খাবার পর্যন্ত দেয়নি। গ্রেপ্তারের পর রাতেই সালাউদ্দিনের ছোট মেয়ে খাদিজাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে রাজু প্রধানকে বাড়ীর দখল নিতে সহায়তা করেন পুলিশ। দুই পুলিশ অফিসারের এমন আচরণে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সালাউদ্দিনের ছেলে সুমন মিয়া।


